Wellcome to National Portal
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২nd ডিসেম্বর ২০২৪

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা

# নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রয়াস কর্মসূচি ‘জয়িতা’

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় বর্তমান সরকারের তিন বছরের সাফল্যজনক কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রয়াস কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত ধানমন্ডিস্থ রাপা প্লাজার ৪র্থ ও ৫ম তলায় স্থাপিত ‘জয়িতা’বিপণন কেন্দ্র । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত ১৬-১১-২০১১ তারিখ হোটেল রূপসী বাংলা থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জয়িতার কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং জয়িতার লগো উন্মোমচন করেন।

পটভুমিঃ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে ১৬০০০ এর অধিক নিবন্ধিত স্বেচছাসেবী মহিলা সমিতি রয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের এ সকল সমিতির সদস্যদের মধ্যে অসংখ্য ছোট ছোট নারী উদ্যোক্তা রয়েছে। পর্যাপ্ত ও অনুকুল নারী বান্ধব অবকাঠামো না থাকার কারণে তৃণমূল পর্যায়ের ছোট ছোট নারী উদ্যোক্তাগণ তাদের সমিতির সদস্যদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারজাতকরণে কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারতেন না। এ সমসত্ম নারী উদ্যোক্তাগণ তাদের পন্য বা সেবা বিপণনে যথেষ্ট অভিজ্ঞ নন। ছোট ছোট নারী উদ্যোক্তাদেরকে তাদের উৎপাদিত পন্য বা সেবা বাজারজাতকরনের জন্য মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীদের উপর নির্ভর করতে হয়। ফলে নারী উদ্যোক্তারা পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে পারতেন না এবং উদ্যোগগুলি টেকসই হত না।

লক্ষ্য উদ্দেশ্যঃ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা বিপণন এবং বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে জয়িতার মাধ্যমে একটি নারী উদ্যোক্তা বান্ধব আলাদা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে সারা দেশ ব্যাপী গড়ে তোলার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এতে করে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে গতি সঞ্চারিত হবে; নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে; নারী ও পুরুষের বৈষম্য হ্রাস পাবে। সর্বোপরি নারীর ক্ষমতায়ন এবং পর্যায়ক্রমে দেশের দারিদ্র বিমোচন হবে।

পরিচালনা ব্যবস্থাপনাঃ জয়িতা বিপণি কেন্দ্রের একটি সাধারণ পর্ষদ রয়েরছ। এককালীন অফেরতযোগ্য নির্দিষ্ট পরিমাণ চঁাদা জমা দিয়ে নিবন্ধনকৃত স্বেচছাসেবী মহিলা সমিতি সাধারণ পর্ষদের সদস্য হবেন। পর্ষদ জয়িতার উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও বাসত্মবায়ন কৌশলের সাথে সংগতিপূর্ন একটি পূর্নাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করবে। ন্যূনতম বছরে দুইবার সাধারণ পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ পর্ষদ বাৎসরিক কর্ম পরিকল্পনা, বাজেট অনুমোদন করবে এবং কর্মপরিকল্পনা বাসত্মবায়ন অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে। সাধারণ পর্ষদের ২/৩ অংশ সদস্যের সম্মতিক্রমে নীতিমালায় যে কোন মৌলিক পরিবর্তন/পরিবর্ধন/ পরিমার্জন করা যাবে।

জয়িতা বিপণি কেন্দ্রের নয় সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। তনমধ্যে ছয় জন সদস্য সাধারণ পর্ষদের সদস্যদের ভোটে এক বছরের জন্য নির্বাচিত। অবশিষ্ট তিন জন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য যথা: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িতেব নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, উক্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অফিসিয়াল সদস্য হিসেবে সংযুক্ত হবেন। এই তিনজন আরবিট্রেটরী হিসেবেও দায়িতব পালন করবেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী পদাধিকার বলে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপার্সন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ভাইস-চেয়ারপার্সন ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিচালনাপর্ষদের সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িতব পালন করবেন।

গতিশীলতার সাথে জয়িতা পরিচালনার জন্য একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৪জন পরামর্শক সমন্বয়ে একটি নির্বাহী পর্ষদ রয়েছে। তারা জয়িতার বিপণি কেন্দ্রের সার্বিক পরিচালনায় দৈনন্দিন নির্বাহী দায়িতব পালন করবেন।

Cheif Executive Officer (CEO) ও ৪ জন পরামর্শকগণের দায়িতব জয়িতার Brand Image গড়ে তোলা ও Profit Maximization করা।

Corporate culture অনুসারে বিপণি কেন্দ্র পরিচালিত হবে। পণ্যের গুনগত ও নান্দনিক মান নিয়ন্ত্রণ, সাশ্রয়ী মূল্য, গ্রাহক সেবা ইত্যাদির উপর সর্বোচ্চ গুরুত্বদান করে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করাই জয়িতা-র মূল লক্ষ্য।

অবকাঠামোগত অবস্থাঃ নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রয়াস কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত ধানমন্ডিস্থ রাপা পস্নাজার ৪র্থ ও ৫ম তলায় স্থাপিত ‘জয়িতা’ বিপণন কেন্দ্রে ১৩৯টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে যা ১৮০টি সমিতির মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১৩৯টি ষ্টলের মধ্যে ১০টি দেশীয় খাবার স্টল, ৬টি কৃষি পণ্য ও ১২৩টি হসত্মশিল্পজাত পণ্যের স্টল রয়েছে। ৫ম তলায় একটি বিনোদনের জন্য একটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ রয়েছে। যেখানে দেশীয় ও ঋতু ভিত্তিক পালা পার্বন এবং সাংস্কৃতিক আচার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । ৫ম তলায় শিশুদের জন্য একটি চিলড্রেন কর্ণার রয়েছে। ৫ম তলায় জয়িতার একটি প্রশাসনিক অফিস ও সভা কক্ষ রয়েছে। উদ্যোক্তা এবং সেলস্ গার্লদের জন্য নামাজের স্থান রয়েছে।

বাণিজ্যিক লিংকেজঃ পণ্য যোগানের ক্ষেত্রে তৃণমূল পার্যায়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত সমিতি মহিলারাও ধীরে ধীরে জয়িতার সাথে সম্পৃক্ত হচেছন। বাজার ব্যবস্থা সম্প্রসারণে একজন মার্কেটিং কনসালট্যান্ট কাজ করছেন। প্রচার ও ব্র্যান্ড-ইমেজ গড়ে তুলতে একজন কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তাদেরকে আধুনিক ফ্যাশন ও ডিজাইন সম্পর্কে প্রশিক্ষণদানের জন্য একজন ডিজাইন কনসালট্যান্ট রয়েছেন। আইটির মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রবেশ ও প্রচার বং জয়িতা-র ব্র্যান্ড-ইমেজ গড়ে তোলা হবে। জয়িতা-র একটি ওয়েভ সাইট (www.joyeeta.com.bd) রয়েছে।

কর্মসূচির মেয়াদ বরাদ্দঃ নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রয়াস কর্মসূচি তথায় জয়িতার বাসত্মবায়নকাল ফেব্রম্নয়ারি-২০১১ জুন-২০১৩ পর্যমত্ম । জয়িতা বাসত্মবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমান ৭০৫.৭০ লক্ষ টাকা।

প্রত্যাশাঃ ১৬/১১/২০১১ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের পর থেকে জয়িতার কার্যক্রম আশাব্যঞ্জক । আশা করা যায় দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা বিপণন এবং বাজারজাতকরনের লক্ষ্যে একটি নারী উদ্যোক্তা বান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলতে জয়িতা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। নারী উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা ও আর্থিক সহায়তার জন্য IFIC ব্যাংক কর্তৃক ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।

 

স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতি নিবন্ধন, নিয়ন্ত্রণ ও অনুদান বিতরণ   :

 

স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতি মূলত সমাজ উন্নয়ন ও কল্যাণপূলক প্রতিষ্ঠান। তৃণমূল পর্যায়ের মহিলাদেরকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করা ও তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত করার লক্ষ্যে মহিলাদেরকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করা এর অন্যতম দায়িত্ব। সমাজে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে নিবন্ধনকৃত স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিসমূহ  বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। ১৯৭৮ সনের ৫ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রিকরণ ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ (১৯৬১ সালের ৪৬ নং অধ্যাদেশ) এর ক্ষমতাবলে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর শুধুমাত্র মহিলাদের দ্বারা গঠিত মহিলাদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী মহিলা প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিবন্ধন, নিয়ন্ত্রণ এবং সমিতিসমূহের মধ্যে বার্ষিক অনুদান বিতরণ করে আসছে।  ১৯৮৯ সাল হতে ৬৪ জেলার উপপরিচালকের কার্যালয় থেকে সমিতি রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অনলাইনে সমিতি নিবন্ধনের জন্য একটি সফট্ওয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে। উক্ত সফট্ওয়ারে cboreg.dwa.gov.bd এই লিংকে লগ ইন করে অনলাইনে সমিতি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সমগ্র বাংলাদেশে বর্তমানে  নিবন্ধিত সমিতির সংখ্যা প্রায় ২০৭২১টি  ।

 

অনুদান প্রদান : দেশের আর্থিক সঙ্গতিহীন কর্মক্ষম মহিলাদের আয়বর্ধণমূলক উন্নয়ন কর্মকান্ডে অধিক সংখ্যায় অংশগ্রহণ ও তাদের আত্মনির্ভরশীল করার লক্ষ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত মহিলা সমিতি সমূহের মধ্যে বৎসরিক অনুদান বিতরণ করা হয়ে থাকে।

 

 

অনুদান প্রদানের উদ্দেশ্য

(ক)    মহিলাদের সংগঠিত করে সমিতি গঠনের মাধ্যমে দলগতভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করা;

         (খ)     নিবন্ধনকৃত মহিলা স্বেচ্ছাসেবী  প্রতিষ্ঠান/সংস্থাকে অনুদান প্রদান করে দরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা,

         অবিবাহিতা ও প্রতিবন্ধী মহিলাদের উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবার ও সমাজের উন্নয়ন সাধন করা ;

(গ)      অনুদানের অর্থ দ্বারা সমিতির সদস্যদের বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি ;  

            (ঘ)      মহিলাদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও আত্মনির্ভরশীল করার মাধ্যমে সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠন  ;

          ঙ)      আর্থিক সহায়তা প্রদান করে দরিদ্র অথচ কর্মক্ষম মহিলাদেরকে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা।

 

সাধারণ অনুদান :    ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে নিবন্ধিত সমিতিসমূহের মধ্যে নিম্নবর্ণিত ভাবে  ১২,৬৬,৪০,০০০/- (বার কোটি ছেষট্টি লক্ষ ‍সত্তর হাজার) টাকা সাধারণ অনুদান বিতরণ করা হয়েছে।

 

শ্রেণির ধরণ

টাকার হার

সমিতির সংখ্যা

টাকার পরিমা

ক   শ্রেণিভুক্ত সমিতি

৪০,০০০/-

১০০০টি (১০০ ৪০,০০০)

৪,০০,০০,০০০/-

খ   শ্রেণিভুক্ত সমিতি

৩০,০০০/-

১১০৮টি  (১১০৮X৩০,০০০)

৩,৩২,৪০,০০০/-

গ   শ্রেণিভুক্ত সমিতি

২৫,০০০/-

   ২১৩৬টি (২১৩৬X ২৫,০০০)

৫,৩৪,০০,০০০/-

                                                  মোট

৪২৪৪টি সমিতি

১২,৬৬,৪,০০০/-

                                                               কথায়:    বার কোটি ছেষট্টি লক্ষ চল্লিশ হাজার  টাকা।

বিশেষ অনুদান :  ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৬২ জেলার ১২৩ টি সমিতিকে ৫০,০০০/- টাকা হারে ( ১২৩ X ৫০,০০০/-) = ৬১,৫০,০০০/- (একষট্টি লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বিশেষ অনুদান বিতরণ করা হয়েছে।

 

স্বেচ্ছাধীন অনুদান : ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর নিজস্ব বিবেচনায় ৩৬ টি সমিতিকে ৫০,০০০/- টাকা হারে ( ৩৬ X ৫০,০০০/-) = ১৮,০০,০০০/- (আঠার লক্ষ ) টাকা স্বেচ্ছাধীন অনুদান বিতরণ করা হয়েছে।

 

অর্জিত সাফল্য :  সমাজে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে নিবন্ধনকৃত স্বেচছাসেবী মহিলা সমিতি সমূহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করছে। ফলে ক্রমান্বয়ে গোটা নারী সমাজের অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে। ১৯৭৭-৭৮ সাল হতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতি সমূহকে বৎসরওয়ারী অনুদান বিতরণ এবং বছরে প্রতি সমিতি হতে গড়ে প্রায় ১০০ জন দরিদ্র মহিলা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে।

 

# বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র, অঙ্গনা

ভুমিকা :   মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে ১৯৮৬ সালে বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র অঙ্গনার যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৪ সালে “মহিলাদের অর্থকরী   কর্মকান্ডে  অংশগ্রহনের সুযোগ সৃষ্টি এবং আইনগত সহায়তা সংক্রান্ত সমন্বিত কর্মসূচী” প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হয় যা পরবর্তীতে জনবলসহ মহিলা সহায়তা কর্মসূচী প্রকল্পে স্থানান্তর হয় এবং ২০০১ সালে মহিলা সহায়তা কর্মসূচী প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়িত বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র অঙ্গনা কার্যক্রম রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরিত হয়।

লক্ষ্য :    জাতীয় উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় নারীকে সম্পৃক্তকরন  ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহন।

 উদ্দেশ্য :

  • নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের নিজস্ব উৎপাদিত পন্য বাজারজাত ও বিক্রয়ের সহায়তা করার মাধ্যমে তাদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।
  • অঙ্গনার মাধ্যমে সারা দেশব্যপী নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
  • অঙ্গনার মাধ্যমে নারীরা আয়বর্ধক কাজে সম্পৃক্ত হলে নারী ও পুরুষের বৈষম্য হ্রাস পাবে এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও দেশের দারিদ্র বিমোচন হবে।

অঙ্গনায় যা পাওয়া যাচ্ছে :    অঙ্গনায় উন্নত মানের বিভিন্ন রকম বেডকভার, নকশী কাঁথা, হাতে কাজ করা শাড়ী, কাজ করা থ্রীপিস, সাধারন শাড়ী, পেটিকোট, ব্লাউজ,বিভিন্ন ডিজাইনের নানা সাইজের ব্যাগ,পার্স, তোয়ালে, নিউবর্ণ জামা,বেবী কাঁথা, লন্ড্রি ব্যাগ, বিভিন্ন ডিজাইনের কুশন কভার, ক্রশের টেবিল ম্যাট, আয়রন কভার, কিচেন এপ্রোন, শতরঞ্জি, কার্পেট পাটের তৈরী বাহারী ব্যাগ,শোপিস ইত্যাদি যুগোপযোগী মালামাল পাওয়া যায়।

মালামাল সংগ্রহ :

  • মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সকল জেলা/উপজেলা কার্যালয় এর প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত মহিলাদের তৈরীকৃত মানসম্মত যুগোপযোগী দ্রব্যাদি।
  • মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নিবন্ধিত মহিলা সমিতির সদস্যদের  তৈরীকৃত মানসম্মত দ্রব্যাদি।
  • মহিলা উদ্যোক্তাদের স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরীকৃত মানসম্মত দ্রব্যাদি।

মূল্য নির্ধারন ও বিক্রয় :  যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক যে সব দ্রব্যাদি গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয় শুধুমাত্র সেই সব দ্রব্যের ক্রয় মূল্যের সাথে ৫% মুনাফা যোগ করে দ্রব্যাদির বিক্রয় মূল্য নির্ধারন করা হয়।     

  • মালামাল পাকা রশিদের মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়।
  • মালামাল একদরে বিক্রয় করা হয়, বিক্রিত মাল ফেরৎ নেয়া হয় না।
  • অঙ্গনার বিক্রয়বাবদ প্রাপ্ত অর্থ নির্দিষ্ট নিয়মে ব্যাংকের  হিসাবদ্বয়ে জমা দেয়া হয়।

বিল পরিশোধ :  অঙ্গনার মাধ্যমে বিক্রয়কৃত মালামালের বিল অতিরিক্ত পরিচালক/পরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং সহকারী পরিচালক (মার্কেটিং) এর যৌথ স্বাক্ষরে অঙ্গনার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসাব হতে A/C Payee চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান/সমিতি/ব্যক্তিকে পরিশোধ করা হয়। মুনাফার অর্থ প্রতি অর্থবছর শেষে সরকারী কোষাগার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া  হয়।

অডিট :   প্রতিবছর সরকারী অডিট টিম দ্বারা অঙ্গনার আয় ব্যয়ের হিসাব সম্বলিত অডিট কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়।

অঙ্গনার সাফল্য :   মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরাধীন বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র অঙ্গনার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাগন তাদের তৈরিকৃত মালামাল সরবরাহ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল  হচ্ছে।  অঙ্গনার মাধ্যমে প্রতিবছর নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।  এভাবেই অঙ্গনা সরাসরি নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের পথে ও সরকারের বার্ষিক আয়ে সম্পৃক্ত হচ্ছে।

ভিডব্লিউবি কার্যক্রম (পূর্বের ভিজিডি) এর পটভূমি:

১৯৭৪ সালের ৩ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য এ কার্যক্রম শুরু হয়। যা তৎকালীন সময়ে রিলিফ হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমকে টেকসই উন্নয়ন ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন Vulnerable Group Development (VGD) কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে খাদ্য সহায়তাকে উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৮৮ সালে SIFAD (Strengthening Institution’s for Food Assisted Development) এর Recommendation অনুযায়ী  খাদ্য সাহায্য/Relief থেকে উন্নয়ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আশির দশকের পূর্ববর্তী সময়ে নারী পুরুষ সকল হত দরিদ্রদেরকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হত। ১৯৭৪ সাল থেকে জুন ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ভিজিডি কর্মসূচি  ত্রাণ ও পুণর্বাসন মন্ত্রণালয় এর আওতাভুক্ত ছিল। ১৯৯৬ সাল হতে কর্মসূচির উপকারভোগী শতভাগ মহিলা হওয়ায় ভিজিডি কর্মসূচি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর হয়। ১৯৭৪ সাল থেকে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে কর্মসূচিটি পরিচালিত হতো। ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে সম্পূর্ন সরকারের নিজস্ব (জিওবি) অর্থায়নে ভিজিডি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ভিজিডি কর্মসূচির ক্রমবিকাশ: ভিজিডি কর্মসূচি ১৯৭৪ থেকে ২০২৪: ৫০ বছরে প্রকৃত অবস্থা নিম্নরূপ 

  • ১৯৭৪ - ১৯৭৮ ওয়েলফেয়ার রিলিফ (ভিজিডি)
  • ১৯৭৯ - ১৯৮৭ ত্রাণ ও পূণর্বাসন Relief & Rehabilitation  
  • ১৯৮৮ - ১৯৯০ রিলিফ থেকে উন্নয়নে পরিবর্তন Development Pilot Project
  • ১৯৯১ - ১৯৯২ উন্নয়ন পরিবর্তন (Development Changes)
  • ১৯৯৩ - ১৯৯৬ উন্নয়ন অভিজ্ঞতা (Development Learning)
  • ১৯৯৭ - ২০০৪ Development Expansion
  • ২০০৫ - চলমান Poverty elevation through Life skill & IGA training with savings

 ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) কর্মসূচির নাম পরিবর্তন:

জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল পত্রের (NSSS-2015) আলোকে প্রণীত বাস্তবায়ন কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) অনুযায়ী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১০/০৪/২০২২ খ্রি: তারিখ ২৮তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২-২০২৩ অর্থবছর হতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ভিজিডি কর্মসূচি’র নাম পরিবর্তনপূর্বক ‘ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট (VWB)’ কার্যক্রম নামকরণ করা হয়েছে।

ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা:

ভিডব্লিউবি কার্যক্রম একটি জাতীয় কার্যক্রম, যার ব্যাপ্তি সমগ্র দেশব্যাপী। বাংলাদেশ সরকার খাদ্য সম্পদের যোগান দিচ্ছে। খাদ্য সম্পদের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থার (NGO) মাধ্যমে উন্নয়ন প্যাকেজ (প্রশিক্ষণ, সঞ্চয় ও ঋণ ইত্যাদি) সেবা প্রদান করা হচ্ছে।


 

 

  • ভিডব্লিউবি কার্যক্রম (২৪ মাস সময়কাল একটি চক্র)
  • মাসিক ৩০ কেজি হারে ২ বছর চক্রে প্যাকেটজাত খাদ্য বিতরণ
  • মাসিক ২২০/- (দুইশত) টাকা হারে সঞ্চয় জমা
  • উপকারভোগী মহিলাদের সামাজিক সচেতনতা ও আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান
  • চক্র শেষে বাৎসরিক প্রারম্ভিক মূলধন হিসেবে সঞ্চয়ের অর্থ ফেরৎ প্রদান

ভিডব্লিউবি উপকারভোগীগণ ২৪ মাস চক্রে মাসিক ৩০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা ও প্রশিক্ষণ সেবার মেয়াদ সমাপ্তির পর সরকারী/বেসরকারী সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন কর্মকান্ডে পূর্ণাঙ্গভাবে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা অর্জন করে।

ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের  উদ্দেশ্য:

 

ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের দরিদ্র পীড়িত এবং দুঃস্থ গ্রামীণ মহিলাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক উন্নয়ন করা, যাতে তারা বিদ্যমান খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, পুষ্টিহীনতা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা এবং নিম্ন সামাজিক মর্যাদার অবস্থানকে সফলভাবে অতিক্রম করে চরম দারিদ্রস্তরের উপরের স্তরে টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

 

স্বল্পমেয়াদী উদ্দেশ্য :

গ্রামীণ অসচ্ছল পরিবারসমূহের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়তা করা এবং বিপণনযোগ্য দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা, সঞ্চয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রারম্ভিক মূলধন সংগ্রহের জন্য উৎসাহিত করা এবং ঋণ প্রাপ্তিতে সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে উপার্জনক্ষম করে গড়ে তোলা; এবং চলমান উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য যোগ্য করে তোলা।

ব্যবহারিক শিক্ষা এবং অন্যান্য মানব উন্নয়ন সম্পর্কিত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে অসচ্ছল মহিলাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক উন্নয়ন এবং সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করা।

উপকারভোগীর সংখ্যা:

বর্তমানে সারা দেশে ভিডব্লিউবি উপকারভোগী মহিলার সংখ্যা : ১০,৪০,০০০ জন।

২০০৯-২০১০ চক্র হতে ২০২৩-২০২৪ চক্র পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিভুত মোট উপকারভোগীর সংখ্যা:

 

চক্রের বিবরণ

উপকারভোগীর সংখ্যা  

 

 

 

 

২০০৯-২০১০

৭,৫০,০০০ জন

২০১১-২০১২

৭,৫০,০০০ জন

২০১৩-২০১৪

৭,৫০,০০০ জন

২০১৫-২০১৬

৭,৫০,০০০ জন

২০১৭-২০১৮

১০,০০,০০০ জন

২০১৯-২০২০

১০,৪০,০০০ জন

২০২১-২০২২

১০,৪০,০০০ জন

২০২৩-২০২৪

১০,৪০,০০০ জন

মোট =

৭১,২০,০০০ জন

উপকারভোগী নির্বাচন পদ্ধতি:

প্রতিটি চক্রে উপকারভোগী নির্বাচনের পূর্বে ‘উপকারভোগী নির্বাচন ও খাদ্য বিতরণ সংক্রান্ত পরিপত্র’ জারী করা হয়। মাঠ পর্যায়ে প্রেরিত পরিপত্র অনুসরণপূর্বক প্রতিটি চক্রে ভিডব্লিউবি উপকারভোগী বাছাই/নির্বাচন করা হয়। ভিডব্লিউবি কার্ড পাওয়ার জন্য আগ্রহী মহিলাদের প্রাথমিক আবেদন ফরম (ছক-১) এনজিও প্রতিনিধি/ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায়/a2i- এর একসেবা/My gov/৩৩৩ টেলিফোন নম্বর, জাতীয় মহিলা সংস্থার তথ্য আপার মাধ্যমে কিংবা আবেদনকারী মহিলার স্ব-উদ্যোগে যে কোন স্থান হতে অনলাইনে পূরণ করার সুযোগ রাখা হয়। পার্বত্য এলাকা এবং  দুর্গম উপজেলার জন্য, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই, সেখানে মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে অফলাইনে আবেদন করার সুযোগ থাকবে। মোবাইল এ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরে “VWB” নামে পাওয়া যাবে। ভিডব্লিউবি উপকারভোগী বাছাই/নির্বাচন কার্য ভিডব্লিউবি ওয়েব বেইজড সফটওয়্যারের (www.dwavwb.gov.bd) মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সারাদেশের ১০,৪০,০০০ (দশ লক্ষ চল্লিশ হাজার) ভিডব্লিউবি উপকারভোগী নির্বাচনের জন্য উপকারভোগীর আবেদন গ্রহণ, পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে উপকারভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।  এক্ষেত্রে উপকারভোগীদের NID প্রদান বাধ্যতামূলক।  

খাদ্য বিতরণ পদ্ধতি:

  • ভিডব্লিউবি উপকারভোগীগণ ২ বৎসর বা ২৪ (চব্বিশ) মাসব্যাপী চক্রে প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে চাল/পুষ্টিচাল প্রাপ্ত হবেন;
  • মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে খাদ্য বিতরণের সরকারি মঞ্জুরী আদেশ (GO) জারীর পর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুকূলে খাদ্য বরাদ্দ আদেশ (AO) জারী করা হয়;
  • খাদ্য বরাদ্দ আদেশ অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের অনুকূলে ডিও জারীর পর চেয়ারম্যান স্থানীয় খাদ্য গুদাম হতে খাদ্য উত্তোলনপূর্বক ইউনিয়ন পরিষদে ভিডব্লিউবি মহিলাদের মধ্যে পূর্ব নির্ধারিত তারিখে খাদ্য বিতরণ করে।

  

 

কর্মএলাকা:

সমগ্র বাংলাদেশে ৬৪টি জেলা,  ৪৯৩টি উপজেলা এবং ৪৫৮৩ টি ইউনিয়ন ।

 

 

কার্ড বরাদ্দ:

জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে ভিডব্লিউবি কার্ড বরাদ্দ (চাল) বাংলাদেশের দারিদ্রতার মানচিত্র (Poverty map) ও দারিদ্র স্মারণীর (Poverty database) ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। এই মানচিত্র ও স্মারণীতে উপজেলা ভিত্তিক মোট জনসংখ্যার শতকরা কতভাগ অতি দরিদ্রসীমার নীচে বাস করে তা প্রদর্শিত হয়।

ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের মোট কার্ডসমূহ উপজেলাভিত্তিক অতি দরিদ্রতার শতকরা হার-এর আনুপাতিক হারে বন্টন করা হয়। এক্ষেত্রে উচ্চ দারিদ্র হার সম্পন্ন উপজেলাসমূহ বেশি বরাদ্দ পেয়ে থাকে । কম দারিদ্র হার সম্পন্ন উপজেলাসমূহ তুলনামূলকভাবে কম বরাদ্দ পায়। উপজেলার সকল ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি কার্ড বরাদ্দের ক্ষেত্রে উপজেলা ভিডব্লিউবি কমিটি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও দূর্দশাগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে কার্ড বন্টন করে। তবে কোন অবস্থাতেই সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা এলাকায় ভিডব্লিউবি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়না।  

উন্নয়ন প্যাকেজসেবা:  

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও এনজিও-র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী এনজিও ভিডব্লিউবি মহিলাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য সেবা প্রদান করে থাকে। নির্বাচিত এনজিও ভিডব্লিউবি উপকারভোগীকে সামাজিক সচেতনতা ও আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, সঞ্চয় ব্যবস্থাপনা এবং আয়বৃদ্ধিমূলক কাজের জন্য ঋণ প্রদানে সহায়তা করে যাবে। সেবা প্রদানকারী এনজিও সরকারের নিকট মাসিক ও ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ, সঞ্চয় ও ঋণ প্রদান সম্পর্কিত প্রতিবেদন নিয়মিতভাবে পেশ করে । ভিডব্লিউবি উপকারভোগীগণ এনজিও থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। তবে ঋণ নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। উপকারভোগীগণ যে নির্দিষ্ট আয় বৃদ্ধিমূলক কাজ করার জন্য ঋণ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, স্থানীয় বাজারে তার চাহিদা ও যথার্থতা কতটুকু তা যাচাই করে এনজিওগুলো তাদের ঋণ প্রদান করবে।  এনজিও কোন প্রকার জামানত ছাড়াই মহিলাদের ঋণ দিবে। ঋণ প্রদান করা হবে সেই আয় বৃদ্ধিমূলক কাজের জন্য, যার উপর তারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।

প্রশিক্ষণ:

ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র মহিলাদের ০৯টি মডিউলের মাধ্যমে জীবন দক্ষতা ও জীবিকা নির্বাহভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, যার মাধ্যমে উপকারভোগীদেরকে একদিকে যেমন সামাজিকভাবে সচেতন করা হচ্ছে, অন্যদিকে এই নারীদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উৎপাদনমুখী কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। 

পুষ্টিচাল বিতরণ কার্যক্রম:  

ভিডব্লিউবি উপকারভোগী মহিলাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার জন্য সারাদেশে ২০৫টি উপজেলায় (সরকারিভাবে ১৭০টি উপজেলা এবং বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে ৩১টি উপজেলা ও নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল (NI) এর মাধ্যমে ৪টি উপজেলায়) ৪,৬৬,৫৮৯ জন উপকারভোগীকে ফর্টিফাইড রাইস (পুষ্টিচাল) বিতরণ করা হচ্ছে। পুষ্টিচাল বিতরণ শুরু হয় ২০১৩ সাল (কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলায়)।

 

 

 

 

 

 

এই কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে সাধারন চালের সাথে ০৬টি মাইক্রো নিউট্রেন্ট (ভিটামিন এ, বি১, বি১২, আয়রন, ফলিক এসিড, জিংক) মিশ্রণপূর্বক পুষ্টিচাল প্রস্তত করে ফর্টিফাইড রাইস বিতরণ করা হচ্ছে। রাইস ফর্টিফিকেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে ভিডব্লিউবি কার্ডধারী মহিলার পরিবারসমূহের সদস্যবৃন্দ তথা মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের অভাবজনিত অপুষ্টির উপাদানের পরিমাণ কমে আসবে।

ভিডব্লিউবি সফটওয়ার:

ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা আনায়নের লক্ষ্যে www.dwavwb.gov.bd ওয়েববেইজড সফটওয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে। ওয়েববেইজড সফটওয়ারের মাধ্যমে উপকারভোগীদের ডাটা বেইজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ২০১৯-২০২০ চক্রে পরীক্ষামূলকভাবে সফটওয়ারের মাধ্যমে ১১টি উপজেলায় উপকারভোগী নির্বাচন শুরু করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১-২২ চক্র হতে সম্পূর্ণ অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন গ্রহণসহ উপকারভোগী নির্বাচন করা হচ্ছে। এর ফলে ১০,৪০,০০০ জন উপকারভোগী একটি ডাটাবেইজ তৈরী হয়েছে। 

মনিটরিং পদ্ধতি:

সরেজমিনে পরিদর্শন ও ই-মটিটরিং এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের ভিডব্লিউবি উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ ও খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে।  

কার্যক্রমের সার্বিক অর্জন/প্রভাব:

প্রতিটি ২(দুই) বছর মেয়াদী ভিডব্লিউবি চক্রে প্রত্যেক উপকারভোগী মহিলাকে মাসিক ৩০ কেজি খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি উন্নয়ন প্যাকেজ সেবার আওতায় নির্বাচিত এনজিও’র মাধ্যমে সামজিক সচেতনতা, আয়বর্ধক ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। চক্র সমাপ্তির পর প্রাপ্ত প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে নিজেদের আয়বর্ধক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। যা সরকারের দারিদ্র দূরীকরণ কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সার্বিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে।

# মা ও শিশূ সহায়তা কর্মসূচি

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ধীন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত "দরিদ্র মায়ের জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা" এবং "শহর অঞ্চলের ল্যাকটেটিং ভাতা" উন্নত সংস্করণ "মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি"। জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের আওতায় ০ থেকে ৪ বছরের শিশুর পুষ্টিমান উন্নয়ন এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য এই কর্মসূচী পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কর্মসূচিটি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্দেশ্য এবং শিশুদের প্রথম ১০০০ দিনের পুষ্টির গুরুত্ব সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়। গর্ভবতী মহিলারা কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্তির জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের জাতিয় পরিচয়পত্র, এ এন সি কার্ড এবং পছন্দের অ্যাকাউন্ট তথ্যসহ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। এই কর্মসূচিটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (MIS) এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

প্রতিমাসে নির্দিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে ভাতাভোগী নির্বাচন করা হয় এবং G2P (Government to Person) পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান করা হয়। গর্ভাবস্থায় এবং নবজাতকের পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গর্ভাবতী ও দুগ্ধদানকারী মা প্রতিমাসে ৮০০ টাকা হারে ভাতা পেয়ে থাকেন যা তাদের অতিরিক্ত খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে করতে সহায়তা করে।ভাতা প্রদানের পাশাপাশি গর্ভাবতী মা ও শিশুর পুষ্টি, নিরাপদ প্রসব ও গর্ভাবতী মা এবং তার পরিবারের সদস্যদের (শাশুড়ি/স্বামী/মা/ননদ) পুষ্টি সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ পরিবর্তনের আনয়নের জন্য উঠান বৈঠকের মাধ্যমে Behavior Change Communication (BCC) প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে এবং এই প্রশিক্ষণটি সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত। গর্ভাকালীন সময় থেকে শিশুর ৪ বছর পর্যন্ত শিশুর যত্ন গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টির জন্য অতিরিক্ত খাবার গ্রহনে প্রতিমাসে মায়ের অ্যাকাউন্টে ভাতার অর্থ হস্তান্তর করা হয়। প্রতি মাসে ভাতার অর্থ প্রদানের ফলে পরিবার গুলো তাদের পুষ্টিকর খাদ্যাবাস গড়ে তুলতে সক্ষম হবে এবং স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ নিশ্চিত হবে। পুষ্টি সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ পরিবর্তনের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সারাদেশে কৃশকায় ও খর্বকায় শিশুর জন্মের হার হ্রাস করার দীর্ঘমেয়াদী ফল হিসেবে প্রসবপূর্ব যত্ন এবং মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে। এর মাধ্যমে বর্তমানে ২০০০০০(দুই লক্ষ) সুবিধা ভোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা মাসিক ভিত্তিতে ভাতা সুবিধা পাচ্ছে।

জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল পত্রের দ্বিতীয় ধাপ (২০২১-২০২৬) এর কর্ম পরিকল্পনা অনুসারে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে ৬ মিলিয়ন শিশুকে এই কর্মসূচীর অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

 # সেলাই মেশিন  বিতরণ সংক্রান্ত তথ্যাদি 

     নিবন্ধনকৃত মহিলা সমিতি, দুঃস্থ ও প্রশিক্ষিত নারীদের আয়বর্ধক কর্মকান্ডে সহায়তার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট নীতিমালার        আলোকে প্রতি বছর সেলাই মেশিন ক্রয় ও বিতরণ করা হয় :

 

 

 

 

 

 

 

ক্র:নং

অর্থ বছর

পূর্বের জের

ক্রয়কৃত

মোট মজুদ

(কলাম ৩+৪)

বিতরণ

অবশিষ্ট

(কলাম ৫-৬)

মন্তব্য

১৯৯৯-২০০০

 

১৭৭

১৭৭

১৭৭

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৩১৮টি সেলাই মেশিন ক্রয়ের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে।

২০০০-২০০১

 

৫৯৫

৫৯৫

৫৯৫

২০০১-২০০২

 

২০০২-২০০৩

 

১২৫৪

১২৫৪

১২৫৪

২০০৩-২০০৪

 

২০০৪-২০০৫

 

১৪৫০

১৪৫০

১৪৫০

২০০৫-২০০৬

 

২২৭৩

২২৭৩

২২৭৩

২০০৬-২০০৭

 

১২৫০

১২৫০

১২৫০

২০০৭-২০০৮

 

১০

২০০৮-২০০৯

 

১১

২০০৯-২০১০

৯৬১

৯৬১

৭৬১

২০০

১২

২০১০-২০১১

২০০

১৯৮০

২১৮০

১৭৮০

৪০০

১৩

২০১১-২০১২

৪০০

১৭৩৬

২১৩৬

১৫৩৬

৬০০

১৪

২০১২-২০১৩

৬০০

১৬৩০

২২৩০

১৪৩০

৮০০

১৫

২০১৩-২০১৪

৮০০

১৬৭৮

২৪৭৮

১৩৭৮

১১০০

১৬

২০১৪-২০১৫

১১০০

২২১৭

৩৩১৭

২১১৭

১২০০

১৭

২০১৫-২০১৬

১২০০

২০৩৯

৩২৩৯

২০১৯

১২২০

১৮

২০১৬-২০১৭

১২২০

২৫৩৪

৩৭৫৪

২৫০৭

১২৪৭

১৯

২০১৭-২০১৮

১২৪৭

২২৭৫

৩৫৭৫

১৪১৪

২১০৮

২০

২০১৮-২০১৯

২১০৮

৩৯৫০

৬০৫৮

১৬৫৩

৪৪০৫

২১

২০১৯-২০২০

৪৪০৫

৪১০৯

৮৫১৪

৪০২

৮১১২

২২

২০২০-২০২১

৮১১২

৩৩২৭

১১৪৩৯

৩৬০৫

৭৮৩৪

২৩

২০২১-২০২২

৭৮৩৪

৪৫১২

১২৩৪৬

৪৪৬৩

৭৮৮৩

২৪

২০২২-২০২৩

৭৮৮৩

৪১২৫

১২০০৮

৪৮৬৬

৭১৪২

২৫

২০২৩-২০২৪

 

৭১৪২

 

 

৭১৪২

৫১০৮

২০৩৪

সর্বমোট

-

৪৪০৭২

-

৪২০৩৮

২০৩৪

 
      উল্লেখ্যে যে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত অবশিষ্ট ২,০৩৪টি সেলাই মেশিনের মধ্যে ত্রুটিযুক্ত ৭০৪টি এবং বিতরণযোগ্য ১,৩৩০টি সেলাই মেশিন  রয়েছে।