বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। তথাপি বৈষম্যমূলক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার কারণে নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় সম্পদ, তথ্য ও যোগাযোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে না। সরকারী পর্যায়ে মহিলাদের জন্য গেজেটেড পদে ১০% এবং ননগেজেটেড পদে ১৫% কোটা সংরক্ষণের বিধান থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটা পূরণ হয় না। কারণ হিসেবে চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহ নারী/পুরুষ কর্মীর সংখ্যাগত বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ে সচেতনতার অভাব ও উদ্যোগ যেমন রয়েছে তেমনি নারীদের রয়েছে চাকুরী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য যথাযথভাবে না পাওয়া, কার্যকরী যোগাযোগহীনতা, পত্রিকা পাঠের সুযোগ না থাকা ।যার ফলশ্রুতিতে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকুরীর আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। উপরোক্ত কারণসমূহকে সামনে রেখে বেকার শিক্ষিত,স্বল্প শিক্ষিত,দক্ষ কিংবা অদক্ষ চাকুরী প্রত্যাশী নারীদের চাকুরী প্রাপ্তিতে সহযোগিতা প্রদান, চাকুরী সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ ও চাকুরীতে মহিলাদের কোটা পূরণের লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে রাজস্ব বাজেটের সীমিত জনবল নিয়ে অত্র দপ্তরে চাকুরী বিনিয়োগ তথ্য কেন্দ্র চালু হয়। পরবর্তীতে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে কার্যক্রমটিকে অত্র দপ্তরের আরও ২টি কার্যক্রমের (বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র অংগনা এবং নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল) সঙ্গে একত্রিত করে প্রয়োজনীয় জনবলের সমন্বয়ে একটি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। ১৯৯৫ সাল হতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরাধীন মহিলা সহায়তা কর্মসূচীর একটি কম্পোনেন্ট হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। |
|
কার্যক্রম সমূহের বিবরণী নারীকে চাকুরী প্রাপ্তিতে সহায়তা করার ও চাকুরী ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কোটা পূরণের বিষয়ে সচেতনতা ও ফলোআপ করার নিমিত্ব মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নীচ তলায় চাকুরী বিনিয়োগ তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। |
|
শিক্ষিত,স্বল্প-শিক্ষিত,দক্ষ-অদক্ষ আগ্রহী চাকুরী প্রত্যাশী মহিলাদের নির্ধারিত ফরম পূরণ পূর্বক প্রাপ্তি রশিদের মাধ্যমে ১৫/-(পনের) টাকার বিনিময়ে কেন্দ্রের সদস্য হিসেবে নাম নিবন্ধন করে নিবন্ধনকার্ড প্রদান করা হয়। যার মেয়াদ ২ (দুই) বছর এবং সকল সদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত সংক্রান্ত একটি তালিকা তৈরী করা হয়।নিবন্ধনকৃতদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন শূণ্য পদের বিপরীতে আবেদন পত্র প্রেরণ করা হয়। শুরু (জুলাই’ ৯৫) হতে জুন’২০১৫ পর্যন্ত সময়ে ৭০৩০ (সাত হাজার পাঁচশত ত্রিশ) জন চাকুরী প্রত্যাশী নারী এ কেন্দ্রে নাম নিবন্ধন করেছেন। এ যাবত ৭৫২১ টি আবেদন পত্র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয়। উল্লেখ্য যে, কোন প্রার্থী যোগ্য হলে তার আবেদন পত্র একাধিক উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয়। তবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই কেবল চাকুরী প্রাপ্ত হবে। এযাবত ৬২৬ জন নারী নিজেদের চাকুরী প্রাপ্তির তথ্য প্রদান করেছেন। |
|
সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ১০% গেজেটেড/কর্মকর্তা এবং ১৫% ননগেজেটেড/কর্মচারী পদ সকল প্রতিষ্ঠানে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করার নিমিত্তে নির্ধারিত ছকসহ পত্র প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে সকল মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভাগ/ব্যুরো/অধিদপ্তর/উইং সমূহ হতে প্রাপ্ত তথ্যের সমন্বয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত পূর্বক প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়।
যে সকল প্রতিষ্ঠান হতে প্রতিবেদন পাওয়া গিয়েছে তার সংখ্যা ২৯২ টি ( প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, রাষ্ট্রপতির দপ্তর, বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়সহ ১৬ টি মন্ত্রণালয় এবং ৩২ টি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ২৭৯ টি প্রতিষ্ঠান)। |